প্রথম কাগজের টাকা ব্যবহার করে চীনে হয়েছিল। ৭ম শতাব্দীতে টাং রাজবংশের সময়ে (প্রায় ৬১৮-৯০৭ খ্রিষ্টাব্দ), কিন্তু এটি বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সং রাজবংশের (৯৬০-১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দ) সময়ে চীনে প্রচলিত ধাতব মুদ্রার ব্যবহার খুবই সাধারণ ছিল, কিন্তু ধাতব মুদ্রার ভারের কারণে ব্যবসায়ীরা সহজ এবং হালকা বিকল্প খুঁজছিলেন। এর ফলস্বরূপপ্রথম কাগজের টাকা ব্যবহার । চীনের কাগজের মুদ্রাকে বলা হতো “জিয়াওজি” (Jiaozi), যা আধুনিক কাগজের মুদ্রার প্রথম রূপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
শুরুতেই চীনে কাগুজে মুদ্রা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে কয়েক দশক পর মূল্যস্ফীতি দেখা দিলে এ মুদ্রা মুখ থুবড়ে পড়ে। এর বদলে হুইজি নামে একধরনের নোটের প্রচলন হয়। সরকারের নিজস্ব ছাপাখানায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় এগুলো ছাপানো হতো।
প্রতিটি নোটের আকার ছিল এ ফোর আকারের কাগজের মতো। কাগুজে নোটগুলোর মূল্যমান হাতে লেখা ছিল। আসল কি না, তা নিশ্চিত করতে এগুলোতে লাল কালির একধরনের সিল মারা ছিল।
এখন আর পৃথিবীতে চীনের ওই আদিম কাগুজে মুদ্রার অস্তিত্ব নেই। শুধু ওই সব কাগুজে মুদ্রা উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হতো, এমন একটি মুদ্রণ প্লেট উদ্ধার করতে পেরেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এখন পর্যন্ত জানা তথ্যমতে, পৃথিবীতে সরাসরি লেনদেন উপযোগী কাগুজে মুদ্রা প্রথম চালু হয় চীনে। দেশটির সং সাম্রাজ্যের সময়ে (৯৬০ থেকে ১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দ) এ ধরনের মুদ্রার প্রচলন হয়। সম্রাট ঝেনজংয়ের শাসনামলে (৯৯৭ থেকে ১০২২ খ্রিষ্টাব্দ) সিচুয়ান প্রদেশের একদল বণিক মিলে প্রথম কাগজের মুদ্রা ছাপিয়েছিলেন।
এই প্রযুক্তি পরবর্তীতে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে ইউরোপে। ১৬৬১ সালে সুইডেন প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে কাগজের মুদ্রার প্রচলন করে। তবে কাগজে ছাপানো মুদ্রার ইতিহাসের মূল সূচনা হয় চীন থেকে।