বিয়ের পর ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হয় দ্রুত ও গভীরভাবে

বিয়ের পর ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হতে সময় লাগে মাত্র ২ বছর এবং এটি আপনার চিন্তাধারাকেও পরিবর্তন করে দেয়।  ১৮ মাস ধরে ১৬৯ জন নবদম্পতির উপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিয়ের পর ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন যে উন্মুক্ততা, কর্তব্যপরায়ণতা, বহির্মুখিতা, সদয়তা এবং স্নায়বিকতা—এই পাঁচটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে, যা দেখায় বিয়ে কীভাবে মানুষের ব্যক্তিত্বকে গভীরভাবে রূপান্তরিত করে।

নারীদের ক্ষেত্রে,

বিয়ের সাথে তাদের আবেগগত স্থিতিশীলতা বাড়ে। তারা উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং রাগের মতো আবেগের ক্ষেত্রে কম সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, যা বোঝায় যে বিয়ের অঙ্গীকার এবং নিরাপত্তা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে, পুরুষরা কর্তব্যপরায়ণতায় বৃদ্ধি পায়, বিয়ের ভূমিকা এবং প্রত্যাশার সাথে খাপ খাওয়ানোর মাধ্যমে তারা আরও নির্ভরযোগ্য এবং দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে।

তবে, গবেষণায় উভয় অংশীদারের ক্ষেত্রেই সময়ের সাথে সাথে উন্মুক্ততা হ্রাস পেতে দেখা গেছে, যা তাদের বৈবাহিক জীবনের রুটিন এবং কাঠামোর সাথে খাপ খাওয়ানোর প্রতিফলন। এই পরিবর্তনটি পরিচিত প্যাটার্নে স্থির হওয়ার ইঙ্গিত দেয়, যা সম্পর্কের প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা নতুনত্ব এবং অনুসন্ধানের বৈশিষ্ট্যগুলিকে সীমিত করতে পারে। এছাড়াও, দম্পতিরা বহির্মুখিতার ক্ষেত্রে হ্রাস পায় এবং তাদের সামাজিক পরিসর সীমিত করতে দেখা যায়, যেখানে তারা বৈবাহিক সম্পর্কের দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে। এই পরিবর্তনটি দেখায় যে তাদের অগ্রাধিকার পুনর্নির্মাণ হচ্ছে, যেখানে সময় এবং শক্তি বহিরাগত সংযোগের পরিবর্তে সম্পর্কের দিকে পুনর্নির্দেশিত হয়।

বিয়ের শুরুতে নারীরা সাধারণত আরও সদয় থাকলেও, সময়ের সাথে উভয় অংশীদারের ধৈর্য হ্রাস পায় এবং মতবিরোধ বৃদ্ধি পায়। গবেষকরা মনে করেন, প্রেম পর্ব শেষ হওয়ার সাথে সাথে পুরনো অভ্যাস এবং কম আকর্ষণীয় আচরণ পুনরায় ফিরে আসে, যা সম্পর্কের সুরে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ব্যক্তিত্বগত পরিবর্তনগুলো বয়স, বিয়ের আগে সম্পর্কের দৈর্ঘ্য, একত্রে বসবাস, বিবাহিত জীবনের সন্তুষ্টি বা পিতৃত্বের মতো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়নি। এটি দেখায় যে এই পরিবর্তনগুলো কিছুটা সার্বজনীন এবং অপরিহার্য।

মনোবিজ্ঞানীরা জোর দেন যে, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমাশীলতা এই পরিবর্তনগুলি সফলভাবে পরিচালনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী। এই বৈশিষ্ট্যগুলো চর্চার মাধ্যমে দম্পতিরা তাদের ব্যক্তিত্ব এবং সম্পর্কের পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একটি দৃঢ় এবং সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।